Popular Post

zwani.com myspace graphic comments

Sunday, August 25, 2013

 একাধারে ওয়েব ডেভেলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ব্লগার, এসইও, আউটসোর্সিং এবং ইন্টারনেট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছি। 2008 সালে এস.এস.সি পরীক্ষা শেষ করে আতাউর রহমান সোহেল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রথম মাইক্রোসফট অফিস সম্পর্কে শিক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে এই জগতে আমার অনুপ্রবেশ। আমার প্রথম ওয়েবডিজাইন মাত্র ১ মাস নিজে নিজে শেখার পরেই করি। এই কাজের পর থেকেই আবার সবার সামনে নিজেকে অন্য পরিচয়ে নিয়ে আসি। শুরু হয় নতুন জীবনের পদচারনা এবং এখনও চলছে।
আমি গতানুগতিক ধারার বাইরে অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে থাকি। বাংলাদেশে যারা অনলাইনে আয় করা ডলার ক্যাশ করতে সমস্যায় পরেন তাদের জন্য আমি পেপ্যালসহ অন্য ইন্টারন্যাশনাল কার্ড সাপোর্ট দিয়ে থাকি। নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং এ আসেন তাদের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ডলার ভাঙ্গান একটু ঝামেলা হয়ে যায়। আবার অনেক পুরানা লোকও জরুরী টাকার প্রয়োজনে আমার কাছে ডলার ভাঙ্গাতে আসে। আমি তাদের ডলার ভাঙ্গিয়ে দিয়ে একটা কমিশন রাখি। এর থেকেও আমার আয় হয়। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম পেবিডিটি।
আমি যখন দেশের বাইরের কাজ যোগাড় করার চিন্তা করি, তখন মাথাতে আসে প্রথম ই-কমার্স ব্যবসা করার। এই পরিকল্পনা থেকে আমি আমার এক অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী বন্ধুর মাধ্যমে সে দেশে ব্যবসা করার লাইন্সেস নেই। একটা ই-কমার্স সাইট বানাই আমার অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী সেই বন্ধুর সাহায্য নিয়ে। তখন এই ব্যবসার জন্য পেপ্যাল, মাস্টারকার্ড, ভিসা কার্ড এর ব্যবস্থা করি। ৫ টা অষ্ট্রেলিয়ান ওয়্যার হাউজের সাথে চুক্তিও শেষ করি। কিন্তু যে ধরনের সেটআপ দরকার সেটার ব্যবস্থা করতে পারছিলাম না। তখন আপাতত সেটার পরিকল্পনা বন্ধ রাখলাম। আবার অন্যদিকে আমার কাছে বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল কার্ড আছে জানার পর অনেকে তাদের বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য আমার সাহায্য নেয়া শুরু করল। তখন অনেকের অনুরোধ রাখতে গিয়ে শুরু করি অনলাইন পেমেন্ট সাপোর্ট ব্যবসা। এই প্রজেক্টের নাম দেই পেবিডিটি। সেটা করার পর আমি অনেক কিছু শিখতে পারি। ফ্রিল্যান্সিং জগতের অনেক অলিগলি সম্পর্কে জানতে পারি। কারন যারা অনলাইনে উপার্জন করে তাদের অনেকে ডলার আনার জন্য পেবিডিটি'র সার্ভিস নিয়ে থাকে। এই সার্ভিস দিতে গিয়ে দেখি, অনেকে অনেক জায়গা থেকে ইনকাম করে। অনেক অজানা পদ্ধতিগুলো জানতে পারি। মূলত এই ব্যবসা করতে গিয়েই ফ্রিল্যান্সিংয়ের ব্যাপারে ভাল ভাবে উদ্ধুদ্ধ হই।
আমাদের দেশে অনলাইনে যারা উপার্জন করে তারা সবাই এক জায়গাতেই দৌড়ায়। যখন ডাটা এন্ট্রির হাওয়া ছিল তখন সবাই মিলে এই কাজটাই করেছে। যখন লাইভ স্ট্রিমিংয়ের এফিলিয়েশন শুরু হল সবাই এই জায়গাতে ঝাপিয়ে পড়ল। এখন চলছে ওডেস্কের হাওয়া, সবাই এখন এখানে সাতার কাটছে। কিন্তু অনলাইন ইনকাম মানে শুধু মাত্র ওডেস্ক, এফিলিয়েশন না। আরও অনেক উপায় আছে, যেগুলা আমরা জানিনা। সেগুলা মানুষকে জানানোর জন্য আমার একটা বই ছাপানোর পরিকল্পনা আছে। সেটা বর্তমানে প্রতি মঙ্গলবার দৈনিক আমার দেশ পত্রিকাতে "অনলাইনে ইনকামের ১০০ উপায়" শিরোনামে ছাপা হচ্ছে। এখানে আমি অনলাইনে ইনকামের সত্যিকারের ১০০ টা উপায় নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লিখছি। ভবিষ্যতে বই আকারে প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে, যদি আল্লাহ সেই সুযোগ দিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং অনেক ভাল অবদান রাখার সম্ভাবনা আছে। আমাদের মত দরিদ্র দেশগুলোতে শ্রমের মূল্য কম দেখে বায়াররা এসব কাজ করিয়ে নিতে আগ্রহবোধ করে। এদেশে বর্তমানে মানুষদের মধ্যে প্রচুর আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে এই ব্যপারে। অনেকে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসছে আবার অনেকে ব্যক্তিগতভাবে কিংবা সংগঠিতভাবে অন্যকে দক্ষ করে তৈরির জন্য এগিয়ে এসেছে। এটা অনেক ভাল লক্ষণ। ইতিমধ্যে বায়ারদের কাছে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভাল ধারনা তৈরি হয়েছে। তবে আমাদের দেশে বিদ্যুৎ সমস্যা এবং ইন্টারনেট সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি। এই দিকগুলোতে সমস্যা দূর করা গেলে ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকে আরো অনেক লোক প্রস্তুত হবে এই কাজ করার জন্য। আমাদের দেশে তথ্যপ্রযুক্তির যাত্রা খুব বেশিদিনের নয়। তারপর অনেক মানুষের চেষ্টাতে আমরা খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। অনেক ব্লগ এবং ফেসবুক আপনি দেখে থাকবেন অনেক সফল ব্যক্তি তাদের অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও যেকোন ধরনের সাহায্য কেউ চাইলে সহযোগিতা করে। বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমেও তারা অনেক দক্ষ লোক তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে এদেশের সব জায়গাতে এখন কলুষিত হয়ে গেছে, সেখানে আইটি জগতের এই রকম সৎ পরিবেশ আমাকে বড় স্বপ্ন দেখায়। এটা আমাদের তথ্য প্রযুক্তির অনেক ভাল দিক।
আমার এই মুহুর্তে ২টা দাবি সরকারের কাছে। বিদ্যুৎ সমস্যা দূর করতে হবে, ইন্টারনেট সেবা দেশের সবজায়গাতে সহজলভ্য করতে হবে। বাংলাদেশের ইন্টারনেট সার্ভিস আগে থেকে অনেকগুন উন্নত হয়েছে। তবে অনেক ভাল করতে হবে। আমার কাছে মনে হয় সরকারের এই জায়গাতে নিয়ন্ত্রন অনেক কম। যে যার মত ব্যবসা করে যাচ্ছে। সরকারকে এখনই জোরালো কোন পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আগ্রহ তৈরির জন্য সরকারকে উদ্যোগ নেয়া উচিত।
আর ফ্রিল্যান্সিং এ যারা ভালো পারফরমেন্স করাতে চান তাদের জন্য বলছি, সবার আগে ইংরেজী জানতে হবে। বায়ারদের সাথে কমিউনিকেশনের জন্য এটা জরুরী। ধৈর্য্য বাড়াতে হবে। কম্পিউটারের যেকোন একটি বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। সাধারনত এসইও, গ্রাফিক্স এবং ওয়েব ডিজাইন জানা লোকদের ফ্রিল্যান্সিং এ ভাল চাহিদা করতে পারে। আগে কিছু শিখার জন্য সময় ব্যয় করতে হবে। এখন যেকোন কিছুর জন্য অনেক ভাল ভাল প্রতিষ্ঠান আছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্লগগুলো থেকেও অনেক কিছু শিখা যায়। তাছাড়া ইউটিউব তো আছেই। আগেই টাকার জন্য কাজ না করে, দক্ষ হওয়ার জন্য কাজ করুন। যখন আপনি দক্ষ হবেন তখন টাকা আপনার পিছনে ছুটবে।

The Won Blog Of EARN FOR TEICKS. The Blog Created by Bijoy Kumar Biswas. Designed by বিজয়*বিজন*বিজু